শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন

পিটার হাসের ব্যাখ্যা

গণমাধ্যমে ভিসানীতি সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • খবর আপডেট সময় : শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৮৯ এই পর্যন্ত দেখেছেন

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর মার্কিন ভিসা নীতিমালা প্রয়োগ হতে পারে- এমন মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হলে তিনি এ ব্যাখ্যা দেন। এছাড়াও পিটার হাসের এমন বক্তব্যে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

শনিবার সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এক সাক্ষাৎকারে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন- রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাবেক-বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যমও আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে এবং ২২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পিটার হাসের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ জানিয়ে সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম গত ২৭ সেপ্টেম্বর ই-মেইলে একটি চিঠি পাঠান মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে।

চিঠিতে মাহফুজ আনাম বলেন, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উপরোক্ত মন্তব্যে বিষয়ে তার মনে এবং সম্পাদক পরিষদের সদস্যদের মনে কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়ায় তিনি চিঠি লিখছেন। সত্যি বলতে কী, এই মন্তব্য আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, আমাদের অনুরোধ থাকবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার।

তিনি বলেন, যেহেতু মার্কিন সরকার এবং রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে সবসময় স্বাধীন ও স্বাধীন গণমাধ্যমের অবিচল সমর্থক, তাই এই মন্তব্য তাদের বিচলিত করেছে।

ভিসা বিধিনিষেধ ‘তাদের কর্ম ছাড়া অন্য কিছুর উপর ভিত্তি করে নয়,’ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে আনাম বলেন, গণমাধ্যমের ‘কাজ’ লেখা বা সম্প্রচার করা। তিনি জানতে চেয়েছেন যে একজন সাংবাদিক যা লেখেন বা সম্প্রচার করেন তার উপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা হবে কিনা।

যদি তাই হয়, তাহলে এটা কি ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ এবং ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা’র আওতায় পড়ে না? গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে? কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে? চিঠিতে জানতে চেয়েছেন আনাম।

আনাম আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য সবসময় অনুপ্রেরণা ও অনুকরণের উৎস হিসেবে কাজ করেছে। সেক্ষেত্রে ভিসা নীতি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলে প্রথম সংশোধনীর মূল্যবোধ কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

মাহফুজ আনামের এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জানান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যাতে করে মিডিয়া আউটলেটগুলো তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পারে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এই দৃষ্টিকোণ যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনো সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রকৃতপক্ষে, আমারা আমাদের নীতিতে যেকোনো উপাদানে জনসাধারণের প্রতিফলনকে স্বাগত জানাই।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে এবং তাদের জন্য মার্কিন ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের।

পিটার হাস বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের বক্তব্য স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এর মধ্যে যারা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে পদক্ষেপ নেয় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102