ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস জানান, বাংলাদেশে আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসা নীতিতে যুক্ত হতে পারে । তার এ বক্তব্যটি সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে উঠানো হলে বিষয়টি স্পষ্ট করেন দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এক প্রশ্নে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন যে, বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালে যেকোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে, যারা এই ধরনের উদ্যোগ নেবে তাদের ওপরও বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। তার সঙ্গে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ড. এ কে আব্দুল মোমেন) বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বাস দিয়েছে যে নির্বাচনের আগে কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। তাই এটা কি সত্য, এবং আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
এমন প্রশ্নে ম্যাথু মিলার পুরোনো কথাই ব্যক্ত করে বলেন, মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী (অ্যান্টনি ব্লিংকেন) নতুন নীতি ঘোষণা করেছিলেন। এর উদ্দেশ্য ছিল না যে বাংলাদেশে একটি নির্বাচনে পক্ষ নেয়া, বরং অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনকে সমর্থনকে করা।
আরও বলেন, আমি বলব যে, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) যখন আমরা নতুন ভিসা বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছিলাম, তখন আমরা উল্লেখ করেছি আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধী উভয় দলের সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত।
সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে দলটি। ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘চিকিৎসার অবস্থা খুবই গুরুতর’ উল্লেখ করে জানতে চাওয়া হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির বিষয়ে আপনার অবস্থান কী?
এ প্রশ্নে বিস্তারিত জবাবে না গিয়ে এক কথায় বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূর পিটার হাস জানান, নতুন ভিসা বিধিনিষেধে মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ নিয়ে মিলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানানো হয়, এ মন্তব্য ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বলা হচ্ছে, এ ধরনের পদক্ষেপ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমুন্নত করার পরিপন্থী। ‘আপনি কি মনে করেন না যে মিডিয়ার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানকে দুর্বল করবে?’
ম্যাথু মিলার বলেন, ভিসানীতির আওতায় কারা পড়েছেন নির্দিষ্ট করে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে এর আওতায় পড়বেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান মিলার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো পক্ষ নেয়ার জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়নি। বরং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতেই এই ভিসা নীতি।
নিউজ /এমএসএম