দেশে অঘোষিত বাকশাল চলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। সোমবার বিকেলে পল্টন মোড়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আয়োজিত পদযাত্রা আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নুর বলেন, ‘আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, আমরা আমাদের ভোটের অধিকার চাই। আমাদের এই চাওয়া তো অন্যায় না। তাহলে সরকার কেন আমাদের দাবি মানছে না। কারণ তারা দেশে ৭৫’র মতো একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করতে চায়। দেশে অঘোষিত বাকশাল চলছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনাই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যার ছেলের সম্পত্তি আমেরিকায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এই সরকার র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনে দিয়েছে। এই সরকারের অপকর্মের জন্য আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় থাকা অবস্থায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা এই সরকারের ওপর চপেটাঘাত। কিছুদিন আগে সেলফি তুলে খুব হাসি ঠাট্টা করছে আর এখন ভিসা নিষেধাজ্ঞায় চোখের পানি ঝড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এই ১৪ বছরে আওয়ামী সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের যত চোখের পানি ঝড়িয়েছে আওয়ামী সরকারকে তার দ্বিগুণ পানি ফেলতে হবে। সরকার উন্নয়নের কথা বলছে অথচ আএলও বলছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ২৮ দেশের মধ্যে শিক্ষিত বেকারে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোকে মানসম্মত চিকিৎসা নেই, বিশেষজ্ঞ নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার উন্নয়ন করেছে। ধারাবাহিকভাবে একটা সরকার থাকলে উন্নয়ন হয়। কিন্তু এই সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। এই লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম। ১ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর শুরু হয়েছে। সরকারের অনেক রথি-মহারথিরা এই নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ বাতিল হতে পারে। ক্ষমতাসীনদের আর কার কার সম্পদ আমেরিকায় বাজেয়াপ্ত হচ্ছে, কার কার ভিসা বাতিল হয়েছে আমরা সেটি জানতে চায়।’
নুর আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মুমূর্ষু অবস্থায়। কখন কি হয় বলা যায় না। কিন্তু তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সরকারের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবরা একটু জ্বর হলেই সিঙ্গাপুরে চলে যায়। অথচ বিনা চিকিৎসায় ডেঙ্গুতে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। সরকার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ায় জনগণের নাভিশ্বাস শুরু হয়েছে। এই ব্যর্থ সরকারের জনগণ পদত্যাগ চায়।
নুর আরও বলেন, ‘জনগণের গণআন্দোলন শুরু হয়েছে। গণআন্দোলনের মাধ্যমেই এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হবে। তবে প্রশাসনকে ব্যবহার করে সরকার দমন-পীড়নের মাধ্যমে আন্দোলন থামাতে চায়। যারা অতিউৎসাহী হয়ে জনগণের বুকে গুলি চালাবে, তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসবে। সুতরাং জনগণ বিরুদ্ধে না গিয়ে জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।’
পল্টন মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এ্যাড. নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন,গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান,শহিদুল ইসলাম ফাহিম,ফাতেমা তাসনিম, সহসভাপতি আব্দুর রহমান , সাংগঠনিক সম্পাদক তোজাজ্জল হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সৈয়দ মিল্টন, নজরুল ইসলাম মিলন, গাজী ইউনুছ, নাজিমুদ্দিন,মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়াসহ আরও অনেকে।
নিউজ /এমএসএম