নওগাঁর বদলগাছীতে গলায় ফাঁস দেওয়া জেসমিন আক্তার সুমি (২৬) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। রহস্যজনক এই মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক তোলপাড়।নিহতের পরিবারের দাবি আত্মহত্যা নয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী সোহেল রানা পলাতক রয়েছে।
নিহত জেসমিন আক্তার সুমি (২৬) বদলগাছী উপজেলার কোলা ইউপির কেশাইল হঠাৎপাড়া গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী ও একই ইউপির লালুহার গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে। সোহেল রানা বদলগাছী পিআইও অফিসে কর্মরত। নিহতের ৩বছরের একটি মেয়ে আছে।
থানা ও স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার ১৯শে সেপ্টেম্বর সকাল আনুমানিক ৬টার সময় স্বামী সোহেল ঘুম থেকে উঠে গৃহবধু জেসমিন আক্তার সুমি (২৬)কে ডাক দিলে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালায় গিয়ে দেখে জেসমিন গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। বিষয়টি দেখে চিল্লাচিল্লি ও ডাকাডাকিতে সোহেলের বাবা-মা সহ আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে এবং ঘরের দরজা ভেঁঙে মৃতদেহটি নিচে নামায়। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে সকাল ৯টায় এস.আই মুনিরুল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে মহাদেবপুর সার্কেল এএসপি জয়ব্রত পাল, বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান এবং তদন্ত (ওসি) মেহেদী মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
নিহতের শাশুড়ি বলেন, গতকাল সোমবার রাতে সোহেল এর সাথে জেসমিনের ঝগড়া হয়। জেসমিন চাকুরী করবে আর সোহেল করতে দিবেনা। এ নিয়ে সোহেল জেসমিনের গাঁয়ে হাত তোলে। পরে জেসমিন রাগ করে নিজের ঘরে ঘুমাতে যায়। আর সোহেল পাশের ঘরে মেয়েকে নিয়ে ঘুমায়। সকালে উঠে দরজা লাগানো দেখে সোহেল ডাকাডাকি করে কোন সারা শব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখে জেসমিন ফ্যানের সাথে ঝুলছিল। সোহেলের ডাক চিৎকারে এসে দেখি জেসমিনের ঝুলন্ত লাশ।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সোহেলের সাথে জেসমিনের কলহ চলে আসছিল। মৃত্যুর আগেই সোহেলের উপর রাগ করে বাপের বাড়ীতে চলে গিয়েছিল। গত রবিবার কিংবা সোমবার সোহেল শশুর বাড়ী থেকে জেসমিনকে নিয়ে আসে। নিয়ে আসার পরই এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা আরও বলেন, সোহেল বউ থাকার পরও পাশের বাড়ীর এক গৃহবধুর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলো যা সোহেলের বউ জেনে ফেলে এ নিয়ে বেশ কয়েক বার ইউনিয়ন পরিষদে দেন-দরবার ও হয়েছে।
এ ব্যপারে বদলগাছী অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান বলেন, নিহতের লাশ সুরুতহাল রিপোর্ট করে দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যপারে নিয়মিত মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।