বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর ধারাবাহিকতায় ইইউ পালামেন্টে বুধবার বাংলাদেশ বিষয়ে এক বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ইপির ছয় সদস্য (এমইপি-মেম্বার অব ইউরোপীয় পার্লামেন্ট) বুধবার রাতে বিতর্কে অংশ নেন। এরপর একটি প্রস্তাবও পাস হয়।
বিতর্ক শেষে ইইউর ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল ভাষণ দেন। তাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবধিকার ও আগামী নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ইইউ ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নাগরিক স্থান সংকীর্ণ, সচেতন মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতাদের অনুষ্ঠানে বাধা প্রদান বিশেষ করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রধানের শাস্তি প্রদানে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম নিয়েও বক্তব্য দেন তিনি। তিনি বলেছেন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের আহ্বানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। জাতিসংঘের ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড’কে বিষয়টি তদন্ত করতে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া উচিত বলেও ইইউ ভাইস প্রেসিডেন্ট মনে করেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি সুষ্ঠু, অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বিবৃতিতে আরো বলেছেন, বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত যাতে ভোটাররা স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজকে এক সঙ্গে কাজ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে নির্বাচনের প্রতি মানুষে আস্থা তৈরি হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং উন্নয়ন ইস্যুতে বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ১৬০ ভোট পেয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভ করে। সদস্যপদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার দায়িত্বও চলে আসে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নিউজ /এমএসএম