আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রীপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে গণমাধ্যমে দেয়ে এক বিজ্ঞপ্তি ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক এ তথ্য জানান।
এর আগে গত সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় ইমরান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। এর পরের দিন তার দেয়া বক্তব্যের ৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জামালপুরের জেলা প্রশাসক ইমরান স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব মির্জা আজমের উপস্থিতিতে এক সভায় বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখার আশা প্রকাশ করেন। তাঁর এ বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
ইসির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষপাতহীন নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। এটি সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট সব আইনের অর্থ ও অন্তর্নিহিত চেতনা। সংবিধানের ১২০ ও ১২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং গণ-প্রতিনিধিত্ব আদেশের ৫ ও ৯১ (গ) নম্বর অনুচ্ছেদসহ আরও বিভিন্ন আইন ও ধারায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট। নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের এখতিয়ার কেবল তফসিল ঘোষণার পর নয়, সব সময় বিদ্যমান থাকে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, জেলা প্রশাসকগণ সাধারণত রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাছাড়া নির্বাচনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করে থাকেন তারা। বর্ণিত অবস্থার প্রেক্ষিতে সরকার, গণতন্ত্র, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর জনমানুষের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে মো.ইমরান আহমেদকে, উক্ত ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে, জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনোরূপ নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া থেকে বিরত রাখা সমীচীন হবে এবং একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকগণকে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্কবার্তা দেওয়া প্রয়োজন মর্মে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিউজ /এমএসএম