বাংলাদেশের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া। প্রবন্ধের শিরোনামটি একটু উৎসুক্য(!) করার স্বার্থেই সংক্ষেপে তাঁকে আই এ ভূঁইয়া বলা হয়েছে।সম্প্রতি, বাংলাদেশের একমাএ নোবল লরিয়েট(?) ড. মো: ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে গ্রামীন টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের টাকা আত্মসাৎের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ১৮ জন শ্রমিক কর্মচারী।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ, আইন মতে গ্রামীন টেলিকমের মোট লভ্যাংশের ৫ ভাগ অর্থ্যাৎ প্রায় ২২ কোটি টাকা শ্রমিক কর্মচারীগনের প্রাপ্ত হওয়ার কথা। কিন্তু উক্ত পরিমান পাওনা টাকা শ্রমিক কর্মচারীদেক প্রদান না করে সমুদয় অর্থ ড.মো: ইউনূস আত্মসাৎ করায় তাঁর বিরুদ্ধে শ্রমিক কর্মচারীগন শ্রম আদালতে মামলা রজ্জু করেছেন। মামলাটি বর্তমানে কথিত আদালতে চলমান।এমতাবস্হায়, ড.মো: ইউনূস অনৈতিক ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অর্থ আত্মসাৎের মামলা স্হগিত বা প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী ক্লিন্টনের মাধ্যমে ১৬০ জন বিশ্বখ্যাত নোবেল লরিয়েট ও রাজনীতিবিদগনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে একটি খোলা চিঠি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেএী শেখ হাসিনা বরাবরে প্রেরন করেছেন।
বর্নিত বিষয়টি বাংলাদেশের মানুষ ভাল ভাবে নেয় নাই এবং সংগত কারনেই স্ব:প্রনোদিত হয়ে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি,বিভিন্ন পেশাজীবি, বীর মুক্তিযোদ্ধাগন, সাংবাদিক বৃন্দ ও বিভিন্ন পএিকা সমুহের সম্পাদক বৃন্দের জাতীয় সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় সমুহের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীগনের সংগঠন সহ শত সহ্শ্রাধিক ব্যক্তিবর্গ নৈতিকতা ও প্রচলিত আইনের প্রশ্ন তুলে কথিত ১৬০ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গের প্রেরীত খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রসংগত উল্লেখ্য, কথিত ১৬০ জন বিশ্ববরেন্য ব্যক্তিবর্গের খোলা চিঠিতে মামলা গুলিকে হয়রানী মূলক মামলা বলা হয়েছে। অথচ শ্রম আদালতে মামলা গুলি দায়ের পর ড.মো: ইউনূস মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট বরাবরে মামলাগুলি খারিজের জন্য আবেদন করার পর মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট অধিকার বন্চিত শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকারের বৈধতা বিবেচনা করে ড. মো: ইউনূসের আবেদন খারিজ করে শ্রম আদালতে মামলা পরিচালনায় কোন বাধা নাই, এই মর্মে আদেশ প্রদান করেন।বর্নিত অবস্হায় ড. মো: ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা গুলি কোন ক্রমেই হয়রানী মূলক নয়।কেননা কথিত মামলার প্রতিটির ক্ষেএে নিন্ম আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত এবং আইন বিশেষজ্ঞগন পুংখানুপুংখু ভাবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নিবিড় পর্যবেক্ষন ও নিরীক্ষন এবং যৌক্তিকতা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার পরও মামলাটিকে হয়রানী মূলক বলা হলে সেটি নি:সন্দেহে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্হার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের সামিল। তাই রাষ্ট্রের আইন কর্ম কর্তাদের উক্ত বিষয়ে প্রতিবাদ করা অত্যাবশ্যক বলে অনেকেই মনে করেন।
বর্নিত কারনেই অ্যাটর্নী জেনারেল অফিসের কেউ হয়তো বা প্রতিবাদের উদ্যোগ গ্রহনের অংশ হিসাবেই ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার কাছে পরামর্শ গ্রহনের জন্য গিয়ে থাকতে পারেন।কারন তিনি তাঁর বিবেকের তাড়নায় দেশের স্বাধীন সার্বভৌম বিচার ব্যবস্হার সন্মান রক্ষার স্বার্থেই গিয়েছিলেন। এতেই ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক ডেকে ড. মো: ইউনূসকে বিচারীক হয়রানী করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি তাঁর আসল সরূপ প্রকাশ করেছেন। ছোট কালে গল্প শুনেছি এবং সিনেমায় দেখেছি ইচ্ছাধারী শাপ সাপুরিয়াদের বীনের সুরে মানুষ রূপধারী অবস্হান পরিবর্তন করে আসল রূপে বা শাপ রূপে বেরিয়ে আসে! ঠিক তেমনি ভাবে ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া দাদন মহাজন ইউনূসের আর্থিক উৎকোচ এবং মার্কিন ভিসা’র লোভে আত্মপ্রকাশ করলেন দেশ বিরোধী রূপে তাঁর ডিপুটি প্রভূ পি ডি হাস এর বীনের আওয়াজে।
প্রসংগত উল্লেখ্য, একজন কৃষি বিজ্ঞানী হিসাবে আমার লেখায় অনেক সময় রাজনৈতিক প্রবন্ধে কৃষি বিজ্ঞান থেকে আহরিত জ্ঞান উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করে থাকি; যেমন, পাতা হলুদ মোজাইক নামক এক ধরনের ভাইরাস রোগের আক্রমনে সাধারনত: টমেটু, বেগুন ও পাট গাছের পাতা হলুদ হয় এবং গাছের খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার ফলে উৎপাদন কমে যায়। এই রোগের জীবানু প্রধানত: বীজের মধ্যে লুক্কায়িত থাকে এবং উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই ফসলে আক্রমন করে। অন্যদিকে, ঝড়ো বাতাসে পাতায় পাতায় ঘর্ষনের ফলেও উক্ত ভাইরাস সংক্রামিত হতে পারে।তবে ধানের পাতাপোড়া রোগ প্রধানত:ঝড়ো বাতাসে পাতায় পাতায় ঘর্ষনের ফলেই বেশী ঘটে।
ডিপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার বায়ো-ডাটা ঘেটে দেখলাম তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া কালীন সময়ে ছাএলীগ করতেন বলে শোনা যায়।আমি চট্টগ্রামে চাকুরীর সময়ে দেখেছি তথায় ছাএ শিবিরের আধিক্য বেশী। তাই এমনও তো হতে পারে যে, ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ছাএলীগ করলেও গোপনে শিবিরের সংস্পর্শে এসে হয়তো বাংলাদেশ বিরোধী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন, যা কিনা এক্ষনে উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে প্রকাশ পেলো?
দ্বিতীয়ত: ড. মো: ইউনূস এবং ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া একই এলাকার লোক না হলেও উভয়েই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা এবং লেখাপড়া করেছেন। তাই একে অপরের সংস্পর্শে এসে বাংলাদেশ বিরোধী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিধায় বর্তমান ইস্যুতে একে অপরের সাথে জোট বেঁধে বাংলাদেশ বিরোধী যুদ্ধে অবতীর্ন হয়েছেন?
তৃতীয়ত: বিদেশীদের মতো ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়াও হয়তো বিরাট অংকের আর্থিক উৎকোচ পেয়েই নীতি নৈতিকতা ভূলে এবং আদর্শচ্যুত হয়ে ড. মো: ইউনূসের পক্ষ নিয়েছেন?
চতুর্থত: অনৈতিক কৃতকর্মের জন্য অনেক সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ রাজাকার হওয়ার সুযোগ আছে; তবে, রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুযোগ নেই। তাই, বহু পুর্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ইনাম আহম্মদ ভূঁইয়া নীতি নৈতিকতা বা আদর্শ ভূলে অবৈধ টাকা এবং মার্কিন ভিসার লোভে আদর্শচ্যুত হয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ও বিশ্বখ্যাত সুদ খোর ড. মো: ইউনূসকে হয়রানী করা হচ্ছে বলে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। অধিকন্তু তিনি সাংবাদিক ডেকে দম্ভ করে অপবিএ ইস্রাইলের বিচার ব্যবস্হার উধ্বৃতি টেনে এনেছেন।রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সেটি করতে পারেন না।সংগত কারনেই তাঁর এই উক্তি প্রমান করে যে ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ড. মো: ইউনূসের বা বাংলাদেশ বিরোধী চক্রের কাছে অনেক আগেই বিক্রি হয়েছেন এবং পরিবার পরিজনসহ আমেরিকার ভিসা ও সেখানে ভরন- পোষনের আশ্বাস পেয়েই তাঁর নীতি আদর্শ দেশপ্রেম বিসর্জন দিয়ে ড. মো: ইউনূসের সাথে একিভূত হয়েছেন।তাই সরকার এতদিন দুধ কলা দিয়ে শাপ পুষেছেন বলে অনেকেই মনে করছেন।
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, দীর্ঘদিন যাবৎ দলে বা সরকারে অনুপ্রবেশকারী রয়েছে বলে শুনে আসছি। কথিত জিপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার আচরনে প্রমান হলো সরকারে এবং দলে স্বাধীনতা বিরোধীরা ইচ্ছাধারী সাপের মতো ঘাপটি মেরে অবস্হান করছে; যাদেরকে অনতিবিলম্বে চিন্হিত করে এবং শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে বহি:স্কার করতে হবে।
লেখকঃ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষিবিদ, গবেষক, কলামিষ্ট এবং উপদেষ্টা, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ।