বিএনপির মহাসমাবেশ রুখে দিতে সরকার নতুন চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বৃহস্পতিবার ঢাকায় আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। কোনো চক্রান্ত করে এ মহাসমাবেশ নস্যাৎ করা যাবে না। প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে দেবেন। অন্যথায় সব দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘আইনজীবী সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফোরাম এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আইনজীবীরা অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের এই যে রাজনৈতিক আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, মানুষের যে উত্থান, এটাকে রুখে দেওয়ার জন্য তারা (সরকার) একটা নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। ওবায়দুল কাদের একটি সভায় বলেছেন যে, বিএনপি বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সীমান্তে অস্ত্র জড়ো করছে।
তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই সরকার সহিংসতা ছড়িয়ে দিতে চায়। আওয়ামী লীগ তাদের ২৪ তারিখের প্রোগ্রাম ২৭ তারিখে নিয়ে গেছে। কেন? কারণ তারা জনগণের সঙ্গে সংঘাত করতে চায়। তখনই কেউ সহিংসতা চায়, যখন তার জনসমর্থন হারিয়ে যায়। আওয়ামী লীগও তার জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব রাজনৈতিক দল একতাবদ্ধ হয়ে একদফা দাবি আমরা ঘোষণা করেছি। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, চলমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। যা এ ডুগডুগি বাজানো নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে হবে না। এজন্য এ কমিশনকে বিদায় করতে হবে। যোগ্য-দক্ষ, দেশপ্রেমিক এবং মেধাবী মানুষদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে কোনো পথ খোলা নেই। ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে এ সরকার মিথ্যা মামলা দিয়েছে। রাজপথে নামলেই রক্ত ঝরাচ্ছে। অথচ কাটাছাঁটা সংবিধানের দোহাই দিয়ে তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চাইছে। শেখ হাসিনার অধীনে নাকি ভোট সুষ্ঠু হবে। হিরো আলম নামে যে ছেলেটা, তাকেও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে দিতে চায় না এ আওয়ামী লীগ সরকার। তাই বলব, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের কোনো আস্থা নেই। জনগণের একটাই দাবি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে এনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।
সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা ২৭ জুলাই যে মহাসমাবেশ ডেকেছি, সেই মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। কোনো চক্রান্ত করে, কোনো ষড়যন্ত্র করে, কোনো সহিংসতা করে এই মহাসমাবেশকে নস্যাৎ করা যাবে না।
ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল ও সৈয়দ মামুন মাহবুবের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এ জেড এম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
নিউজ /এমএসএম