হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ফারজানা আক্তার লিপি নামে এক নারীর বিরুদ্ধে সিলেটের এক ব্যবসায়ীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে ২৪ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় লিপির ভাই মনিরুল ইসলামকে গত মঙ্গলবার (৬ জুন) গ্রেফতার করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। ফারজানা আক্তার লিপি উপজেলার চন্দনা গ্রামের আব্দুর রফিকের মেয়ে।
গত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর সিলেটের আদালতে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের দায়ের করা ওই মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে ফারজানা আক্তার লিপি ও তার মা রাবেয়া খাতুন পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় আসামীদের অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে সিলেটের পিবিআই।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ জুলাই জাহাঙ্গীর আলম সিলেট শহরে অবস্থিত তার মালিকানাধীন প্রাইমেট এডমিশন কেয়ার কোচিং সেন্টারে ফারজানা আক্তার লিপিকে রিসিপশনিস্ট কাম ম্যানেজার নিয়োগ প্রদান করেন। পরবর্তীতে দায়িত্ব পালনের সময় জাহাঙ্গীর আলমের সাথে লিপির ঘনিষ্ঠতা হয়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। সুচতুর লিপি নিজের সৌন্দর্য ও শিক্ষা-দীক্ষা ব্যবহার করে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে পরবর্তীতে বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ হন। ২০২২ সালের মে মাসে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলায় তিনি জেল হাজতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে ২০২২ সালের ২৯ মে সিলেটের পূবালী ব্যাংকের নয়টি ব্যাংকের চেক স্বাক্ষর করে লিপিকে দেন যেন তার মালিকানাধীন একাধিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার প্রয়োজনে লিপি অর্থ ব্যয় করতে পারেন।
৩০ মে জাহাঙ্গীর আলম মারামারির মামলায় আত্মসমর্পণ করে জেল হাজতে যান। এক মাসের বেশি সময় কারাবাস শেষে তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। একই বছরের ২১ জুলাই জাহাঙ্গীর আলম রেজিস্ট্রি কৃত কাবিননামা মূলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ফারজানা আক্তার লিপির সাথে। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর আলম ব্যবসায় খরচের টাকার হিসাব চাইলে লিপি হিসাব দিতে গড়িমসি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলম পূবালী ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই চেকগুলি দিয়ে ২৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা ফারজানা আক্তার লিপি প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার না করে তার নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে ট্রান্সফার করে আত্মসাৎ করেছেন। ওই দিনই জাহাঙ্গীর আলম টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে লিপিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাকে জুসের সাথে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে লিপি তার মা এবং ভাইয়ের সহায়তায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিত আরো কিছু ব্যাংক চেক নিয়ে পালিয়ে যান। জাহাঙ্গীর আলম পরবর্তীতে ফারজানা আক্তার লিপির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি উল্টো বিয়ে হয়েছে এ কথা অস্বীকার করে ব্যাংক চেকে টাকার অংক বসিয়ে মামলা মোকদ্দমা করবেন বলে হুমকি দেন।