আমরা বাংলা ভাষা অর্জন করেছি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা অর্জনের চেতনা কি ছিলো? গণতন্ত্র। আজ ৫১ বছর পরও আমাদেরকে বলতে হচ্ছে, দেশে গণতন্ত্র নাই। শুধু আমরা নই, আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই। গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে আওয়ামী লীগ সরকার হত্যা করেছে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহীদ দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে প্রথম গণতন্ত্রকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল করেছিল উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজ আবার এই আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছর গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে গণতন্ত্রকে হত্যা করে। তিনি বলেন, আজ মানুষের ভোটের অধিকার নেই্। শুধু সংসদ নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও জনগণ ভোট দিতে পারে না। ভোট আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়। আজ মুক্তভাবে কথা বলার অধিকারও নাই। আওয়ামী লীগ মুক্ত চিন্তা রুখতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বারবার হস্তক্ষেপ করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন নিউজ পেপারস সংশোধনী অ্যাক্ট করে সারা দেশে সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে চারটি সংবাদপত্র রেখেছিলো। হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়েছিলো। দ্বিতীয়বার যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলো শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ১৯৯৯ সালে টাইমস-দৈনিক বাংলা ট্রাস্টের চারটি পত্রিকা বন্ধ করে দিলো। তারপর দেখলাম, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেও একই কাজ করলো। ২০১০ সালে ২৭ এপ্রিল চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দিলো। ২০১৩ সালে আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দিলো। সবশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দৈনিক দিনকালও বন্ধ করে দিয়েছে। অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্ত চিন্তার মাধ্যমকে এই সরকার যখনই সুযোগ পেয়েছে বন্ধ করে দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার হটানোর ১০ দফা দাবির চলমান আন্দোলনকে সফল করতে জনগনকে শপথ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল হাই, কবি মাহবুব হাসান ও আনম ফজলুল হক সৈকত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করার কথা ছিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। কিন্তু তিনি গতকাল দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিউজ /এমএসএম