পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় ২৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১৩টিতে শহীদ মিনার আছে। প্রায় ১৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর কলাগাছ,সাদা কাগজ ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মান করে দিবসটি পালন করা হয়।
উপজেলার অধিকাংশ শহীদ মিনারই অনেকটাই জরাজীর্ন অবস্থায় পড়ে থাকে। শুধমাত্র মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সময়েই কেবল একটু পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে কোন মতে দিবসটি পালন করা হয়।
উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৫টি থাকলেও শহীদ মিনার আছে মাত্র ১টি।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩১টি থাকলেও শহীদ মিনার আছে মাত্র ১১টি। উপজেলায় দুইটি ডিগ্রী,একটি আলিম এবং ১৬টি দাখিলসহ মোট এমপিও ভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ১৯টি। এছাড়াও স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে মোট ২৯টি। অথচ কোন প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নাই।
এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২১ ফেব্রুয়ারী শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে যেতে হয় অন্য কোন বিদ্যালয়। অনেক সময় নিজস্ব প্রক্রিয়ায় অস্থায়ী ভাবে কলা গাছ বা কলা গাছ সাদৃশ্য বস্তু দ্বারা তৈরী শহীদ মিনারে ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। উপজেলায় একটি বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলসহ গড়ে উঠেছে অনেক কিন্ডার গার্ডেন থাকলেও সেখানেও নাই কোন শহীদ মিনার।
সরেজমিনে দেখা গেছে,যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে,তাও পরে আছে অযত্ন, অবহেলায়। গাছ গাছালির পাতাসহ ধুলা বালিতে একাকার হয়ে পড়ে মাসের পর মাস। নাই কর্তৃপক্ষের কোন তদারকি। জানা গেছে, কোন কোন স্কুলে শহীদ মিনারের অভাবে বাঁশ বা কলা গাছ দিয়া তৈরী শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে কিছু সংখ্যক শিক্ষক/শিক্ষার্থী শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও একমাত্র শহীদ মিনারের অভাবে কোন কোনটিতে ভাষা দিবসের কোন আয়োজনই করা হয় না। কেউ কেউ প্রায় প্রতি বছর অতি উৎসাহী হয়ে দশমিনা উপজেলা সদরে আসেন দেখতে। তখন এখানকার নানা আয়োজন দেখে মনে মনে আফসোসও করেন অনেকে।
দশমিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবদুল আজিজ বলেন,বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমি চেষ্টা করবো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার করে দেয়া যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন,উপজেলায় এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই,এটা শুনতেই বেমানান। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ্যের নিকট জোড় দাবী জানাই যাতে উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি করে শহীদ মিনার স্থায়ী ভাবে নির্মান করা হয়।
এই বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আল মামুন বলেন, ১৪৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৬টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। এই বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
নিউজ /এমএসএম