সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সিলেট স্টেশন ক্লাবে হেপাটাইটিস বি সংক্রান্ত একটি সচেতনামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে সহযোগিতা করেন রোটারী ক্লাব অব ঢাকা জেনারেশন নেক্সট, ই রোটারী ক্লাব ৩২৮২ এবং জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট।
অনুষ্ঠানে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)।
অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল তার বক্তব্যে হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার নানা দিক সম্বন্ধে আলোকপাত করেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশে লিভার চিকিৎসায় সাম্প্রতিক গবেষনা এবং অগ্রগতির বিষয়েও অবহিত করেন।
অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল জানান যে তার যৌথভাবে উদ্ভাবিত হেপাটাইটিস বি’র নতুন ওষুধ ন্যাসভ্যাক আগামী বছরের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের বাজারে চলে আসবে। লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় স্টেম সেল থেরাপী এবং লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় ট্রান্সআর্টারিয়াল কেমোএম্বোলাইজেশন এবং ইমিনিউনথেরাপীর মতন অত্যাধুনিক চিকিৎসাগুলো তার তত্বাবধানে বাংলাদেশে তো বটেই, এমনকি সিলেটেও এখন নিয়মিত করা হচ্ছে।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ ও ন্যাসভ্যাকের অন্যতম আবিস্কারক জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবরও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে রোটারী ক্লাব অব ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১’এর হেপাটাইটিস বি এলিমেনেশন ক্যাম্পেইন সম্ভন্ধে অবিহিত করেন রোটারী ক্লাব অব ঢাকা জেনারেশন নেক্সটের প্রেসিডেন্ট রোটারীয়ান পর্না সাহা।
রোটারীয়ান পর্না তার বক্তব্যে এসডিজি গোল ৩.৩ অর্জন অর্থাৎ হেপাটাইটিস বি নির্মূলে রোটারীর এই উদ্যেগে সবার, বিশেষ করে সিলেটের রোটারীয়ানদের সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন এবং তার রোটারী ড্রিস্টিক্টের পক্ষ থেকে সিলেটের রোটারীয়ানদের শুভেচ্ছা পৌছে দেন।
সিলেট স্টেশন ক্লাবের সভাপতি এডভোকেট নুরুদ্দীন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটিতে সন্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটে নিযুক্ত ভারতের মান্যবর সহকারী হাই কমিশনার শ্রী নিরাজ কুমার জাইসওয়াল।
সহকারী হাই কমিশনার তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে ভারতের অকৃতিম বন্ধু হিসেবে আখ্যাায়িত করে জানান যে, তার দেশ স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে চলমান সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব গিয়ে থাকে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সামনের দিনগুলোতে এই সহযোগিতা অব্যহত থাকবে এবং এই দুই প্রতিবেশি ভাতৃপ্রতিম দেশের সম্পর্ক একটি অন্য উচ্চতায় উন্নিত হবে।
উল্লেখ্য যে, অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীলের প্রতিষ্ঠিত জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে নানাধরনের কল্যানমুখি কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।
ট্রাস্টটির উদ্যোগে এরই মধ্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাটিজ, জাতীয় ইমাম সমিতি, ইমাম প্রশিক্ষন একাডেমি, নারায়ন হৃদালয় ভারত ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় সিলেটে নিয়মিতভাবে এ ধরনের সচেতনামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
সিভিল সোসাইটি এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করে ট্রাস্টের এই ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ডের পরিধি আরো বাড়ানোর লক্ষ্য ট্রাস্টের রয়েছে।
সিলেটে সাম্প্রতিক বন্যার সময়ে ট্রাস্টের উদ্যোগে সিলেট মহানগরের বহু জায়গায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে।
এছাড়াও বন্যা পরবর্তী সময় সিলেট মহানগর, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জে ট্রাস্টের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এসব ক্যাম্পে হাজার হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হয়।