দেওয়ান ফয়সল। আমাদের প্রিয় ফয়সল ভাই। দীর্ঘ দিনের পরিচিত। মাটির মানুষ। এককালে আমরা সহকর্মী ছিলাম। লন্ডনের বিভিন্ন বাংলা পত্রিকায় কাজ করেছেন, তারপর একদিন লন্ডনের পাট চুকিয়ে ওয়েলসে পাড়ি দিয়েছেন। মাঝে মাঝে ফোনালাপ হয়। ওয়েলস এর বাংলাদেশীদের নিয়ে একটি বই লিখছেন বলে জানতে দেন। মাঝে মাঝে জনমত পত্রিকায় তার প্রবন্ধ পড়ি।
বেশ কিছুদিন হলো আমাকে ডাকযোগে তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘রূপসী ওয়েলস এর কোলে ছোট্ট এক বাংলাদেশ’পাঠিয়ে অনুরোধ করেছিলেন আমি যেন একটি আলোচনা করি।
গ্রন্থটি পড়তে গিয়ে আমি অবাক হই। দেখি ইতিহাসের উপকরণ যেন উপচে পড়ছে। পড়তে পড়তে আমিও ওয়েলস এর কোলে এক টুকরো বাংলাদেশ এর সাথে পরিচিত হই।
ওয়েলসে আমাদের বাংলাদেশীরা শুধু বাস করছেন না, তাঁরা তাদের বসতের ইতিহাস এই মাটিতে পুঁতে রাখছেন। এখানে তারা বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন,শহীদ মিনার স্থাপন করেছেন। এলাকা ভিত্তিক নানা ধরনের ওর্গানাইজেশন গড়ছেন। মসজিদ নির্মান করছেন।
বাংলাদেশীরা নানা ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা মূলধারার কর্মক্ষেত্রে নিজেদের সামিল করে চলেছেন। মূল্ ধারার স্থানীয় রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। তারা নিজেদের ওয়েলস এর নাগরিক হিসাবে পাকাপোক্ত আসন তৈরী করে চলছেন। তবে দেশীয় রাজনৈতিক তৎপরতাও লক্ষনীয় যা আমাদের জাতিগত ঐক্যতাকে বিনিষ্ঠ করবে তাতে সন্দেহ নেই।
গ্রন্থখানিতে যুক্ত করা হয়েছে ওয়েলস এর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, ব্যবসায়ীদের সফলতায় কাহিনী। গ্রন্থখানি ওয়েলস থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশীদের নিয়ে রচিত প্রথম গ্রন্থ।
আমি আশাকরি ওয়েলস নিয়ে আরো নতুন নতুন গ্রন্থ রচিত হবে। আমাদের পূর্বপুরুষ যারা একদিন কটন নানার মতো জাহাজে চেপে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে ছিলেন, এই পরদেশে বৈরী পরিবেশে নিজেদের জন্য এবং নতুন বংশধরের জন্য আবাস তৈরী করেছিলেন তাদের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে তাদের ঋণ শোধ করা আমাদের কর্তব্য।
আমি দেওয়ান ফয়সল কে ধন্যবাদ জানাই গ্রন্থটি পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করি।