বৈরুতের ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ এবং ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল আব্বাস নিলফোরোওশান নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগছি রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই হামলার জবাব দেয়া হবে এবং ইরান এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবে।
গত শুক্রবার ইসরায়েল বৈরুতের বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালায়। হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল ইরান-সমর্থিত শিয়াপন্থী সংগঠন হিজবুল্লাহর বিভিন্ন স্থাপনা। এতে হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহসহ আরো ২০ জন শীর্ষ নেতা নিহত হন। এছাড়া ইরানের কুদস ফোর্সের শীর্ষস্থানীয় সামরিক উপদেষ্টা আব্বাস নিলফোরোওশানও নিহত হন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগছি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন ও হত্যাকাণ্ডের জবাব না দিয়ে ইরান বসে থাকবে না। আমরা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধীদের ও তাদের সমর্থকদের জবাব দেব। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, দেশটির কৌশলগতবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জাবেদ জাফরিও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সঠিক সময়ে এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই হামলার জবাব দেয়া হবে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে জেনারেল আব্বাস নিলফোরোওশানের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। তাকে লেবাননে ইরানের সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আইআরজিসি নিলফোরোওশানের প্রতিরোধ ফ্রন্টের প্রতি অবদান ও তার ভূমিকার প্রশংসা করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খোমেনি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
২০১৯ সালে আইআরজিসির অপারেশন বিভাগের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান জেনারেল নিলফোরোওশান। এর আগে তিনি বাজিস ফোর্সেসকে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং ইমাম হোসেন হেডকোয়ার্টার্সের দায়িত্ব পালন করেছেন। সামরিক কৌশল এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।
এর আগে গত মাসে তেহরানে ইসরায়েলের আরেকটি বিমান হামলায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াও নিহত হন। ওই ঘটনার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল আইআরজিসি।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইরানের প্রতিরোধ ফ্রন্ট এবং তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের এই হামলা দুই দেশের মধ্যকার বিরোধকে আরো তীব্র করতে পারে।
নিউজ /এমএসএম