সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চার ইউনিয়নের ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিকের সৃষ্ট পদে নিয়োগ পাওয়া ৩৭ জন সহকারী শিক্ষক গত ১৪ মাস ধরে হাওরভাতা পাচ্ছেন না। হাওরভাতা না পাওয়ায় এসব শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
মধ্যনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ৮৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে এই উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা দুই হাজার ৫০০ টাকা করে ও সহকারী শিক্ষকরা দুই হাজার ২০০ টাকা করে প্রতিমাসে হাওরভাতা পেয়ে আসছেন।
২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি এই উপজেলার ৩৭ জন সহকারী শিক্ষককে প্রাক-প্রাথমিকের সৃষ্ট পদে পদায়ন করা হয়। একই সাথে নিয়োগ প্রাপ্ত রাজস্ব খাতে থাকা সহকারী শিক্ষকেরা নিয়োগের পর থেকেই হাওরভাতা বাবদ প্রতিমাসে দুই হাজার ২০০ টাকা করে পেয়ে আসছেন। কিন্তু এই উপজেলার ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের সৃষ্ট পদের ৩৭ জন সহকারী শিক্ষক ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দুই হাজার ২০০ টাকা হাওরভাতা পেয়ে আসছিলেন। টানা এক বছর হাওর ভাতা বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের শুধু জুন মাসে বেতনের সঙ্গে এসব শিক্ষকেরা এক মাসের হাওরভাতা পেয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, যেহেতু মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের দাপ্তরিক কাজ এখনো পুরোপুরিভাবে পৃথককরণ হয়নি, তাই একই সময়ে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা দুই উপজেলায় আমরা ১৫৪ জন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ৬৪ জন হাওরভাতা পাচ্ছেন। আমরা মধ্যনগর উপজেলার ৩৭ জন ও ধর্মপাশা উপজেলার ৫৩ জন শিক্ষক হাওরভাতা পাচ্ছি না, আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে ৯০ থেকে ১২০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। এই টাকা বেতনের টাকা থেকে দিতে হচ্ছে। এতে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মধ্যনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, মধ্যমগর উপজেলায় প্রাক-প্রাথমিকের সৃষ্ট পদের ৩৭ জন সহকারী শিক্ষক পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। এসব শিক্ষকদের হাওরভাতা বন্ধ থাকায় তারা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। কিন্তু এখনো হাওরভাতা বাবদ অর্থ বরাদ্দ না আসায় এসব শিক্ষকদেরকে হাওরভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে থাকা পিইডিপি-৪ প্রকল্পের উপ-পরিচালক আবুল বাশার বলেন, হাওরভাতার অর্থ বরাদ্দের জন্য ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বাবদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে বকেয়াসহ মধ্যমগর উপজেলার ৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিকের ৩৭ জন সহকারী শিক্ষককে হাওরভাতা প্রদান করা হবে।
নিউজ /এমএসএম