সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

হিংসা অন্তরের আলো নিভিয়ে দেয়

ইসলাম ডেস্ক
  • খবর আপডেট সময় : বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৮ এই পর্যন্ত দেখেছেন

কারো কোনো অর্জন বা গুণ দেখে অসহ্যবোধ করা, তার ওই গুণ, অর্জন বা সাফল্যের ধ্বংস চাওয়া এবং নিজে তা অর্জন করার আকাঙ্খাকে হিংসা বলা হয়। মানুষের মধ্যে থাকা খারাপ প্রবৃত্তিগুলোর অন্যতম এই হিংসা যা দুনিয়ার বহু ফেতনা, ফাসাদ, ঝগড়া-বিবাদের অন্যতম কারণ। ইসলামে হিংসা নিষিদ্ধ এবং অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। হিংসার কারণে মানুষের নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِيّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النّارُ الْحَطَبَ.
তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। হিংসা নেক আমলসমূহ ধ্বংস করে দেয়, যেমন আগুনে লাকড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০৫)

ঈমান, নেক আমল ও গুনাহ থেকে মুক্ত থাকার কারণে মুমিনের অন্তরে নুর সৃষ্টি হয়। যে নুরের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক তৈরি হয়, নেক কাজে আগ্রহ সৃষ্টি হয়, গুনাহের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হয়। অন্তরের হিংসা-বিদ্বেষ মানুষের অন্তরের এই নুর নিভিয়ে দেয়। তাকে ক্রমশ আল্লাহর পথ ও সত্যের পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং শয়তানের পথে নিয়ে যায়। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِنّ الْحَسَدَ يُطْفِئُ نُورَ الْحَسَنَاتِ.
হিংসা নেক আমলসমূহের নুর বা আলোক নিভিয়ে দেয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০৬)

হিংসা কোনো মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ঈমান ও হিংসা সাংঘর্ষিক বৈশিষ্ট্য। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

لَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ.
কোনো বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না। (সুনানে নাসাঈ: ৩১০৯)

হিংসা যেমন হিংসুকের জন্য ক্ষতিকর, অন্যদের জন্যও বিপদজনক। হিংসার কারণে হিংসুক জুলুম করে, অন্যের ক্ষতি করে। কোরআনে আল্লাহ তাআলা হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন। সুরা ফালাকের শেষ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ مِنۡ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ
আর (আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে। (সুরা ফালাক: ৫)
সুতরাং হিংসা যে সর্বাবস্থায় পাপ ও ঘৃণিত কাজ সে ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে ঈর্ষা করা যায়। ঈর্ষা আর হিংসা এক নয়। ঈর্ষা হলো কারো কোনো অর্জন, গুণ বা কাজ দেখে তার মতো হওয়ার আকাঙ্খা। কারো সৎকাজ করার তাওফিক বা উত্তম গুণের কারণে ঈর্ষা করা, নিজেও ভালো কাজ করার চেষ্টা করা খারাপ কিছু নয়।

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন আল্লাহর দান করা নেয়ামত ও উত্তম গুণের কারণে দুজন ব্যক্তিকে ঈর্ষা করা যায়। রাসুল (সা.) বলেন,

لا حَسَدَ إِلاَّ في اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ في الحَقّ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ حِكْمَةً فَهُوَ يَقْضِي بِهَا ويُعَلِّمُهَا
শুধু দুটি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায়; ওই ব্যক্তিকে ঈর্ষা করা যায় যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং তা কল্যাণের পথে ব্যায় করার সুযোগও দিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকেও ঈর্ষা করা যায় যাকে আল্লাহ হিকমত দান করেছেন, যা দিয়ে সে ফায়সালা করে ও শিক্ষা দেয়। (সহিহ বুখারি: ৭৩, সহিহ মুসলিম: ১৯৩০)

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102