সোমবার ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিবস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে আমি দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্র্রধান ধর্মীয় উৎসব জন্মাষ্টমী। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, দক্ষ রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। সনাতন ধর্ম মতে অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় তিনি পৃথিবীতে আগমন করেন। অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য শ্রীকৃষ্ণ মথুরার অত্যাচারী রাজা কংসকে হত্যা করে মথুরায় শান্তি স্থাপন করেন। এছাড়া কৃষ্ণের প্রেমিকরূপের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর বৃন্দাবন লীলায়, যা বৈষ্ণব সাহিত্যের মূল প্রেরণা। শ্রীকৃষ্ণের ভাব ও দর্শন যুগ যুগ ধরে হিন্দু সমাজ ও সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ অটুট রাখতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ-সংঘাত বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ সমগ্র পৃথিবীতেই অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা মানুষের মধ্যে সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এবং এ সংকট কাটিয়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
দেশের পরিবর্তিত আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে সমাজের অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আয়োজন সর্বজনীন ও উৎসবমুখর হয়ে উঠুক-এ প্রত্যাশা করি।
আমি শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উৎসবের সাফল্য কামনা করি।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।