লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা। সম্প্রতি এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমকে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। বহুল আলোচিত এই বাংলাদেশি কূটনীতিক, যিনি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাইদা মুনা তার মেয়াদে হাইকমিশনকে একধরনের পার্টি অফিসে পরিণত করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে কমিউনিটিতে। তার ‘অপকর্মের’ কারণে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছবি তুলে নিয়ে যায় বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের একটি দল, এমনটাই বলছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার নাজির আহমদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘লন্ডন হাইকমিশন থেকে সাইদা মুনা তাসনিমকে অতিসত্বর প্রত্যাহার করা উচিত। তার মতো তৈলমর্দনকারী ও খয়ের খাঁ কোনও সুস্থ গণতান্ত্রিক দেশের জন্য ভালো নয়।
তিনি কি না করেছেন, সেটা লন্ডনে নিজের চোখে দেখা! সব জায়গায় এমনকি সামাজিক ও কমিউনিটির অনুষ্ঠানগুলোতেও অপ্রাসঙ্গিকভাবে মুখে ফেনা তুলতেন স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদের জয়গান গেয়ে। প্রোগ্রামগুলোতে তার কথা শুনে দৃষ্টিকটু লাগতো। যারা অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করতেন তারা সাক্ষী। মানুষ এত চাটুকার হতে পারে ওই সময়ের তার বক্তৃতাগুলো না শুনলে কেউ বুঝতে পারবেন না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকালে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। ছবি নামানোর ব্যাপারে ঢাকা থেকে কোনও নির্দেশনা ছিল কি না, এমন প্রশ্ন লিখে পাঠালেও জবাব দেননি তিনি।
হাইকমিশন থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে বিএনপির মিছিল থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় লন্ডনে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এ ঘটনার জের ধরে দেশে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটেন বিএনপির যুক্তরাজ্য কমিটির কয়েকজন নেতাকর্মী।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর পর হাইকমিশনে হাইকমিশনারের দেওয়া ভিডিও বক্তব্যের সময় লন্ডনে বিএনপিপন্থি সিনিয়র সাংবাদিক সামসুল আলম লিটন উপস্থিত ছিলেন। তিনি একসময় বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কে ছবি নামিয়েছে, এ ব্যাপারে তিনি জানেন না বলে জানান।